13 August, 2015


হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? প্রযুক্তির এক অনন্য জগত টেকটিউনসে শেখা এবং জানার মধ্যে খুব ভালো আছেন আশা করি। প্রযুক্তি এরকমই এক জগত যেখানে নিত্য নতুন ঘটনা, আবিষ্কার ঘটে চলেছে আমাদের অগোচরে। আর সেই সব ব্রান্ড নিউ আবিষ্কার জানার জন্য প্রযুক্তি প্রেমীদের এই আস্তানায় অনুপ্রবেশ। আমরা জানবো, জানাবো আর নতুন কিছু আবিস্কারে নিজেদের হারিয়ে ফেলবো এই আশাবাদ নিয়ে আমার আজকের ব্যতিক্রম টিউনে আপনাদের স্বাগতম।

নিত্য নতুন আবিষ্কার প্রযুক্তি জগতকে করেছে সমৃদ্ধ। প্রতিনিয়ত নতুন সব আবিষ্কার আমাদের চলার পথকে সুগম করছে। কিন্তু এমনও কিছু আবিষ্কার আছে যা আমাদের এই প্রযুক্তি জীবনকে একটু হলেও বিস্বাদ করে তোলে। আমাদের স্বাভাবিক প্রযুক্তি বিচরণে সেই সব আবিষ্কার আমাদের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বা ভিন্ন অনুভূতি তৈরি করে। 

আজকে আমরা সেই রকম কিছু আবিষ্কার সম্পর্কে জানবো যেটা আমাদের ইন্টারনেট লাইফকে চিন্তিত করে ভাবনার মধ্যে ফেলে, কিছু কিছু সময় বিরক্ত করে তোলে। যাকে বলা হয় সর্ব কালের সর্ব ঘৃণিত ইন্টারনেট আবিষ্কার।



কি জানতে ইচ্ছা করে না, কি এমন আবিষ্কার যা আমাদের অনলাইন জীবনে বিড়ম্বনা তৈরি করছে। হ্যাঁ আপনি ঠিক শুনেছেন। আসুন তাহলে ধীরে ধীরে জেনে নিতে থাকি কি সেই আবিষ্কার, আমাদের কি ক্ষতিই বা তারা করলো, কেনই বা আমাদের প্রযুক্তি জীবনে এসব অভিশাপ। 
সর্ব কালের সর্ব ঘৃণিত ইন্টারনেট আবিষ্কারঃ

প্রযুক্তি প্রেমী হিসেবে আমাদের মাঝে মাঝে তাদের এই অসম্ভব আবিস্কারের জন্য ধন্যবাদ দিতেই হয় যদিও বিরক্তকর এই ঘৃণিত কাজ আমাদের মাঝে মাঝে বিভীষিকা দিয়ে থাকে।


১) পপ-আপ অ্যাডের আবিষ্কারঃ

ইথান জুকারম্যান নামক এক প্রযুক্তি বিশারধ এই পপ আপ অ্যাডের আবিষ্কারক। কোন ওয়েব পেজে ঢুকলে ওয়েব পেজ সম্পূর্ণ লোড হওয়ার আগে যে অ্যাড দেখায় সেটাই মূলত পপ-আপ অ্যাড। পপ-আপ অ্যাড কাস্টোমার বা ভিজিটরকে তাদের প্রয়োজনীয় অ্যাড দেখানোর জন্যই আবিষ্কার হলেও ৭৫ % সময় ভিজিটর অপ্রাসঙ্গিক অ্যাড দেখে থাকেন। যেটা সবার জন্য বিরক্তির কারণ।

 পপ-আপ অ্যাডের আবিষ্কারঃ

২) প্রথম সত্যিকার ভাইরাসের আবিষ্কারঃ

রিচ স্ক্রিন্টা নামক এই কম্পিউটার প্রোগ্রামার তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম সত্যিকারের ভাইরাস। ১৯৮২ সালে যেসব ভাইরাস ছিল সেগুলোর সবগুলোই পরীক্ষামূলক এবং কম ক্ষতিকারক।

কিন্তু সেটা এখন কোন পর্যায়ে চলে আসছে তা তো আমরা বুঝতে পারছি। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৪০০ বিলিয়ন ডলার সাইবার ক্রাইমে ব্যয় হচ্ছে এই পর্যন্ত।

৩) ক্যাপচার আবিষ্কারঃ

ম্যানুয়েল ব্ল্যাম, জন ল্যাংফোরড, লুইজ ভনহেন নামের তিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী ক্যাপচার আবিষ্কার করেন। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে এই ক্যাপচা কতোটা সমস্যাপূর্ণ তা আমরাও বুঝি। সেই সাথে অডিও ক্যাপচা আরও কতো বিরক্তিকর সেটা সহজে অনুমেয়।

একটি ক্যাপচা পূরণে মিনিমাম ১০ সেকেন্ড+ সময় লেগে যায় আর প্রতিদিন প্রায় ২০০ মিলিয়ন ক্যাপচা পূরণ করতে হয়। আর এই ক্যাপচার পিছনে প্রতিদিন মানুষকে ৫ লাখ ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হয়।

৪) অঞ্চলভিত্তিক ইন্টারনেটের সীমাবদ্ধতাঃ

জিওরগ বোদেনহাউসেন নামের এই বিজ্ঞানী এই সীমাবদ্ধতা বের করেন। ইন্টারনেটের সব কন্টেন্ট বা ভিডিও সব দেশের জন্য না। আর এই সব কন্টেন্ট বা ভিডিও দেখার জন্য আপনাকে প্রক্সি সার্ভার বা ভিপিএন ব্যবহার করতে হয়। মূলত কপিরাইট আইনের জন্য অনলাইন সার্ভিস প্রভাইডাররা এই কপিরাইট করেন। কিন্তু স্বাধীনভাবে নেট ব্যবহারের এই দিনে এতে আমরা বিরক্ত হয় বৈকি।

গবেষণায় দেখা যায় ১৭ % আমেরিক্যান প্রক্সি বা ভিপিএন ব্যবহার করেন এই সীমাবদ্ধতা ছাড়ার জন্য।

৫) কুকিস ব্যবহারঃ

ইন্টারনেট কুকিস আবিস্কারের পূর্বে ইউজার সেই ওয়েব সাইট আগে কখনও ভিজিট করছে কিনা বোঝার উপায় ছিল না। লও মন্টুলি ১৯৯৪ সালে নেটস্কেপের জন্য কুকিস আবিষ্কার করেন। যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইউজার বান্ধব অনলাইন জীবন নিচ্চয়তার জন্য কুকিস খুব প্রয়োজনীয়। তবে ওয়েব প্রাইভেসির ক্ষেত্রে সেটা অনেক নিয়ম ভেঙ্গে দিতে সক্ষম।

৮৬ % US ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কুকিস রিমুভ করেন নিয়মিত তাদের অনলাইন জীবনের ডিজিটাল পদচিহ্ন অন্যকে না জানানোর জন্য।

৬) স্প্যাম্প আবিষ্কারঃ

গ্রে থুয়েরক নামের এই বিজ্ঞানী স্প্যাম্প আবিষ্কার করে কুখ্যাত হয়ে আছেন। ১৯৭৮ সালে থুয়েরক ৩৯৩ স্প্যাম ম্যাসেজ পাঠান, যেখানে তিনি কম্পিউটার সেলের জন্য এই ম্যাসেজ পাঠান এবং সেখান থেকে কিছু বিক্রি করতেও সক্ষম হন। গত শদাব্দি থেকে এই মেথড অনলাইন সেল বা প্রমোশনের জন্য আবার ব্যবহার করা হয়। ২০১১ সালে এন্টি এবাউস গ্রুপের মতে ৯০ % ই-মেইল যা পাঠানো হয় তা স্প্যাম্প।

৭) সাইবার ট্রেডমার্কঃ

অন্যের প্রতিষ্ঠান বা সত্ত্ব অনলাইনে ডোমেইনের মাধ্যমে নিজের করার চেষ্টা সাইবার ট্রেডমার্কের মাধ্যমে যেটা নিজেকে বিশ্বস্ত কোম্পানির মাধ্যমে পরিচিত করার চেষ্টা করা। কিন্তু যেটা সার্বিক দিক দিয়ে সাইবার অপরাধ।

ডেনিস টপেন নামক এক অনলাইন কর্মী ১৯৯৫ সালে ১০০ বিখ্যাত কর্পোরেশনের নামে ডোমেইন কিনে রাখেন যা পরবর্তীতে তিনি বিক্রি করে দেন। এভাবেই মূলত এই ট্রেডমার্ক বিক্রি বা নিজের করে নেওয়া খুব বেড়ে উঠে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে কাস্টোমার ট্রেডমার্ক আইন তৈরি করা হয় বৈধতা তৈরির জন্য।



সাইবার জগত এমনই এক জগত যেখানে নিত্য নতুন আবিষ্কারের মধ্যে কিছু বিরক্তিকর জিনিস আমাদের একঘেয়েমি করে তুলছে। আমরা না চাইলেও সেগুলো আমাদের আবদ্ধ করে তোলে।

আজকে আর পেরে উঠছি না। আপনাদের সাইবার জীবন আরও সুন্দর হোক এই কামনায় আজ আমি এখানেই শেষ করছি।

ধন্যবাদ সবাইকে। 

Popular Posts

Translate

Connect With Our Facebook Page